প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দারিদ্র্য, সামাজিক বৈষম্য, নারী নির্যাতন এমনকি সাম্প্রতিককালের করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই- এতে তো আমাদের ক্লান্ত হয়ে পড়ার কথা। কিন্তু তারপরও খেলায় বাংলাদেশ দল জিতলে সবাই উল্লাস করে, সবসময়ই ভালো কিছুর জন্য নতুন করে আশায় বুক বাঁধে।
জিততে হলে প্রতিপক্ষের চাই ১ বলে ৪ রান। বোলিং প্রান্তে সাকিব আল হাসানকে দেখে বোঝাই যাচ্ছে না, তিনি ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল ম্যাচের শেষ বলটি করতে যাচ্ছেন। গ্যালারির দর্শকরা উত্তেজনায় চুপ! সাকিব আল হাসান শান্তভাবে বল করলেন এবং হ্যাঁ, বাংলাদেশের মানুষ যা চাইছিল তাই হলো। উপড়ে দিলেন তিনি স্ট্যাম্প।
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন! মাইক হাতে উল্লাসে মেতে উঠেছেন ধারাভাষ্যকার, দর্শক সারি থেকে জাতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে খেলোয়াড়দের কাছে ছুটে এসেছেন মাশরাফি।
কবে হয়েছিল এমন? হয়নি, কিন্তু হবে এই স্বপ্ন আমরা দেখি প্রতিটি টুর্নামেন্টেই, সেটা বিশ্বকাপের ফাইনালই হোক কিংবা বিশ্বের শক্তিশালী যেকোনো দলের বিরুদ্ধে একটি টেস্ট ম্যাচই হোক। জয় মানেই একরাশ ভালো লাগার মুহূর্ত। আর যে জয়ের আনন্দে মিশে থাকে দেশ তখন তা হয় দেশের গর্ব, দেশের মানুষের গর্ব। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে এমনই এক কাতারে লড়াই করা, এক কাতারে আনন্দে ভাসাতে পেরেছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের বিজয় অর্জন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দারিদ্র্য, সামাজিক বৈষম্য, নারী নির্যাতন এমনকি সাম্প্রতিককালের করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই- এতে তো আমাদের ক্লান্ত হয়ে পড়ার কথা। কিন্তু তারপরও খেলায় বাংলাদেশ দল জিতলে সবাই উল্লাস করে, সবসময়ই ভালো কিছুর জন্য নতুন করে আশায় বুক বাঁধে।
দেশের মানুষের ভালোবাসা ও শ্রম জড়িয়ে আছে এরকম একটি দেশীয় ব্র্যান্ডের সঙ্গে যখন পার্টনারশিপ হয় মাঠের বাইরে, তা কিন্তু মাঠের ভেতরেও একটি আশা জাগায়। অনুপ্রাণিত করে তাদের যারা কোটি মানুষের স্বপ্ন নিজের কাঁধে নিয়ে ব্যাট-বল হাতে লড়বেন।
আমরা এখানে বলছি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সঙ্গে আড়ংয়ের পার্টনারশিপের কথা।
আড়ং এমন একটি ব্র্যান্ড যা সাধারণ মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তনের কথা ভাবে। পরিবর্তন কথাটি মিশে থাকে আড়ংয়ের প্রতিটি কারুশিল্পীর প্রতিটি সুতোর বাঁকে। গ্রামবাংলার সহস্র সংসারে স্বপ্নের ভিত্তি করে দিয়েছে আড়ং, রোজগারের উৎস হিসেবে তার সঙ্গে সম্পর্কের শুরু যা পরবর্তীতে রূপ নিয়েছে এক অনন্য পরিচয়ে। একজন ভূমিহীন, কর্মহীন, সহায়সম্বলহীন, নিঃস্ব মানুষ আড়ংকে খুঁজে নিয়েছে তার বন্ধু এবং সহচর হিসেবে। সংসারে অন্নসংস্থান যেমন হয়েছে রোজগারের বদৌলতে, সেরকম নিজের সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলার সুযোগ পেয়েছেন আড়ংয়ের একজন কারুশিল্পী তার গ্রামের ব্র্যাক স্কুলে। তিনি স্বাস্থ্যসেবার আওতায় এসেছেন ব্র্যাকের স্বাস্থ্য কর্মসূচির মাধ্যমে, নিজের ব্যবসায় বড়ো করেছেন ক্ষুদ্রঋণ থেকে সংগ্রহ করা পুঁজিতে।
বাংলাদেশ দলের এগারো লড়াকু খেলোয়াড় যেমন আজ কোটি মানুষের বিজয়ের স্বপ্ন বহন করে, সেই স্বপ্নের বাহকদের পরিহিত পোশাকটি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে আড়ং আজ যোগ দিতে চায় তাদের মিছিলে।
রিসাইকেলিং বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক থেকে তৈরি পুনর্ব্যবহারযোগ্য সুতোয় বোনা হয়েছে এবারের ২০২১ সালের আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপ দলের জার্সি। এবারের জার্সিটি তৈরি হয়েছে বিশেষ পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখার উদ্দেশ্যে জার্সির পেছনের অংশটি তৈরি হয়েছে মেশ ফেব্রিক দিয়ে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে এর কার্যকারিতা নিরিখ করিয়ে এনে তবেই এটি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা বাঙালি ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে জার্সিটি পৌঁছে দিচ্ছে আড়ং। তাই উল্লিখিত এই দেশগুলোর আড়ং আউটলেট থেকে আমাদের সমর্থকগোষ্ঠীর সদস্যরা নিজেদের জন্য জার্সি সংগ্রহ করতে পারবেন। গত ১১ই অক্টোবর এক জমকালো আয়োজনে আড়ং এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে জার্সিটি সকলের সামনে প্রথমবার প্রদর্শিত হয়।
ভালো করুক বাংলাদেশ ক্রিকেট দল, ইতিবাচক পরিবর্তন আসুক মানুষের মনে এবং জীবনে। আড়ং এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এই যৌথ বিশ্বকাপ মিশন শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের মানুষকে একটি চমৎকার টুর্নামেন্ট উপহার দিক- এই আমাদের ছোট্ট প্রত্যাশা!
সম্পাদনা- তাজনীন সুলতানা
ফটো ক্রেডিট- দ্য ডেইলি স্টার
Excellent work