সাধারণ মানুষকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করতে আমরা বিলি করেছি ১২,০০০ লিফলেট। মানুষের ঘর থেকে ঘরে, দোকানে, ফার্মেসিতে, হাসপাতালে, থানায়- প্রতিটি জায়গায় আমি ও আমার কর্মীরা গিয়ে গিয়ে এই রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে বোঝাতে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। প্রচারণার প্রত্যেকটি উপায়কে আমরা কাজে লাগাচ্ছি। কোনো দিক থেকেই যেন ঘাটতি না থাকে।
এ এক অদ্ভুত কঠিন সময় পার করছি আমরা। করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে সবার জীবনের চলার ছন্দ। মহামারি চেনে না কে পুরুষ, কে নারী; চেনে না কে ছোটো, কে বড়ো। তার আঘাত থেকে সকলকে নিরাপদ রাখতে, সচেতন করতে আমাদের অবিরাম কাজ করে যেতে হচ্ছে। এখন প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান।
আমি একজন ব্র্যাককর্মী। কাজ করছি খুলনায়, ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রাম-এর ফিল্ড কো–অর্ডিনেটর হিসেবে। আমার টিমে আছেন আরও ৭ জন। খুলনা বিভাগের ৯টি জেলায় আমরা লড়ছি করোনা মহামারি প্রতিরোধে।
শুরু থেকে এখন পর্যন্ত করোনা মহামারি প্রতিরোধে ব্র্যাক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, সেখানে আমাদের ছিল সক্রিয় অংশগ্রহণ। সাধারণ মানুষকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করতে আমরা বিলি করেছি ১২,০০০ লিফলেট। মানুষের ঘর থেকে ঘরে, দোকানে, ফার্মেসিতে, হাসপাতালে, থানায়- প্রতিটি জায়গায় আমি ও আমার কর্মীরা গিয়ে গিয়ে এই রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে বোঝাতে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। প্রচারণার প্রত্যেকটি উপায়কে আমরা কাজে লাগাচ্ছি। কোনো দিক থেকেই যেন ঘাটতি না থাকে।
আমরা রাস্তায় রাস্তায় মাইকিং-এর ব্যবস্থাও করেছি, যেন মানুষ ঘরে থেকেই জানতে পারেন এই সময় তাদের কী করণীয়। বারবার নানাভাবে বলেছি, যাতে তারা এর গুরুত্ব বুঝতে পারে। সবার আগে নিজের এবং আপনজনের নিরাপত্তা- এই বিষয়টি প্রত্যেকের অন্তরে গেঁথে দিতে চেয়েছি।
শুরুর দিকে অজানা রোগ করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মনে ভয় ছিল। আমরা তাদের মনে সাহস জুগিয়েছি। বারবার হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কেন দরকার সে বিষয়ে কথা বলেছি। হাত ধোয়ার সঠিক নিয়ম শেখানোর পর দেখা গেল নিজেরা মানছেন, পাশাপাশি অন্যদেরও জানাচ্ছেন।
এখানে লকডাইন শুরু হবার পর আমরা ফোনের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রাম এলাকাভিত্তিক গাছবন্ধু কমিটি পরিচালনা করে। সেই কমিটির প্রতিনিধিদের ফোন করে নিয়মিত জানানো হচ্ছে নিজেদের এলাকা নিরাপদ এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে তারা কী করতে পারে।
ব্র্যাকে কাজ করছি তা প্রায় ৫ বছর হলো। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ব্রত মনে ধারণ করছি সবসময়। কিন্তু এমন পরিস্থিতি আমরা কেউ আগে দেখিনি। তবে আমাদের মনে ভয় নেই, নেই কোনো ক্লান্তি। আমাদের টিমের প্রত্যেকেই দায়িত্বপালনে ভীষণ আন্তরিক। তাদের সাথে সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করছি, পরামর্শ দিচ্ছি যেকোনো প্রয়োজনে। আসলে সকল ব্র্যাককর্মীই নিজ উদ্যোগে এবং সেবামূলক মনোভাব নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করছেন। মহামারি প্রতিরোধে আমরা কাজ করে যাব, এই আমাদের প্রতিজ্ঞা।
মানুষের অর্থকষ্ট এই সময় বেড়ে গেছে বহুগুণ। তারা ঘর থেকে বের হতে পারছে না, কাজ পাচ্ছে না। তাই খেতে পারছে না। তারা তো দিন আনে, দিন খায়। যাদের চরম দুর্দশা দেখছি তাদের যতটুকু সম্ভব আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।
আমরা কাজের প্রয়োজনে যেখানে নেহায়েত না গেলেই নয়, সেখানে যাচ্ছি। সবাই বলেন, সতর্ক থাকতে, সাবধান থাকতে। আমার পরিবার আমাকে সাহস দিচ্ছে, এই দুঃসময়ে কাজ করতে উৎসাহ জুগিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাই সাবধানে থেকেই আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, চালিয়ে যাব।
অনুলিখন- সুহৃদ স্বাগত
সম্পাদনা- তাজনীন সুলতানা
What a writing… very good 👍… keep it up!
Salute to all of you.