৩১ অক্টোবর, বিশ্ব নগর দিবস। এই ধারণার আলোকে আমরা শহর এলাকায় বসবাসরত দরিদ্র মানুষের জন্য স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত, ব্যয়সাশ্রয়ী একটি আবাসন সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। সম্প্রতি দেশের ঝিনাইদহের প্রাণকেন্দ্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের পরিচালনায় চালু হয়েছে সাশ্রয়ী মূল্যে বাড়ি নির্মাণ।
চিন্তাদিদির একটি নতুন দোতলা বাড়ি হয়েছে এখন। বাড়িটি তৈরি হয়েছে তাঁর প্রতিবেশীদের অর্থায়নে, খরচ হয়েছে প্রায় ১২০,০০০ টাকা। তার বয়সও হয়েছে অনেক। চোখে তেমন দেখতে পান না। তবে এই দেখতে না পারা বয়সজনিত কারণে নয়। জন্ম থেকেই তার চোখে বিভিন্ন সমস্যা ছিল। এতদিন তিনি নির্ভরশীল ছিলেন তাঁর স্বামীর ঝালাইয়ের কাজ থেকে সামান্য আয়ের উপর। সবাই জানে, এই এলাকায় চিন্তা দিদিই সবচেয়ে …
সমগ্র অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থাটি যেন এক বিশাল গোলকধাঁধা। বিপন্ন মানবতার এক বিশাল সাক্ষী হয়ে পুরো কক্সবাজার যেন অবলোকন করছে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হওয়া মানুষের হাজারো দুঃখ ও অসহায়ত্বের। সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে বিপন্ন মানুষগুলো নিজেদের সবকিছু পেছনে ফেলে এখানে এসেছেন নিরাপত্তার আশায়।
প্রতিটি দিন যেন এখানে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকা। একেকটা পরিবারের সদস্য সংখ্যা গড়ে ৫ জন। প্রতিদিন তাদের সংগ্রহ করতে হচ্ছে সহায়তা, অনেকেই লড়াই করছেন ক্ষুধার সাথে, শারীরিক অসুস্থতা এবং আরও বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধকতার সাথে। অস্থায়ী আবাসের বেশির ভাগ তাঁবুগুলোর মাথার ওপর কালো রং-এর ত্রিপল বা প্লাস্টিকের আবরণ, সেই সাথে সাগরের একেবারে নিকটে হওয়ায় দিনের বেলা সেখানে অসহনীয় গরম, …
এরপর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে আব্দুর রহিম তার মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। অন্ধকার, ফাঁকা রাস্তা ধরে তিনি বাইক নিয়ে সতর্কভাবে ছুটতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌছে তিনি দেখতে পান ওই সদস্যের পরিবারের সবাই দিশেহারা প্রিয়, হারিয়ে যাওয়া গরুটিকে সবাই পাগলের মতো এদিক ওদিক খুঁজছে। গরুটি তো তাদের পরিবারের একজন সদস্যের মতোই।
‘বিশ্বাস করেন রহিম ভাই আশেপাশে সব জায়গা খুঁজে দেখছি কোথাও নাই।’ লোকটি অস্থিরভাবে বলতে থাকেন, ‘এখন আমি কি করুম কন ভাই।’
গভীর রাতে এমন এক কঠিন পরিস্থিতি। এ সময় কার কীইবা করার থাকে?
আব্দুর রহিমের মাথায় হঠাৎ বিদ্যুৎচমকের মতো একটা আইডিয়া খেলে গেল। নিকটস্থ মসজিদে গিয়ে তিনি …
গত ২৫শে আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে এ পর্যন্ত (১৭ই অক্টোবর) প্রায় পাঁচ লাখ ৮২ হাজার মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। দিনের পর দিন পাহাড়-পর্বত ও জঙ্গলঘেরা অতিশয় দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে ক্ষুধা-তেষ্টায় কাতর এই মানুষগুলো এসে জড়ো হয়েছেন কক্সবাজারে তাঁদের জন্য নির্ধারিত আশ্রয়কেন্দ্র এবং এর আশেপাশে।
কক্সবাজারের দুই উপজেলা উখিয়া ও টেকনাফে মিয়ানমারের আশ্রয়প্রার্থীদের বড় অংশটি আশ্রয় নিয়েছেন। উখিয়ার কুতুপালং এবং টেকনাফের নোয়াপাড়ায় তাঁদের জন্য সরকারনির্ধারিত দুটি আশ্রয়কেন্দ্র অবস্থিত। এই দুই আশ্রয়কেন্দ্রে নব্বই দশকের শুরু থেকে আসা মিয়ানমারের আরো নাগরিকরা আগে থেকেই বাস করে আসছেন। তাঁদের সংখ্যা দুই লাখের কম না।
আশ্রয়কেন্দ্র দুটির স্বাস্থ্য ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অবস্থা আগে থেকেই খুব …
ক্ষুধার তাড়না সবচেয়ে বড় তাড়না। একবেলা খাবার খেয়ে বেঁচে থাকা মানুষগুলোর অনেক ধরণের অভাব আছে, কিন্তু খাদ্যের অভাবটা আঘাত করছে তাদের সবচেয়ে বেশি। দুপুরের খাবারের লাইনে মানুষের ঢ্ল দেখলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় আমরা একুশ শতকে আছি। এই সময়ে এমন দৃশ্যে থমকে যায় আমাদের ক্রমঅগ্রসরমান সভ্যতা, প্রশ্নবিদ্ধ হয় বিবেক এবং মানবতাবোধ।
ধরা যাক, থাইংখালি অস্থায়ী আবাসের কথা। দুপুরের খাবারের সময় কেউ যদি ওখানে অবস্থান করেন তাহলে তাকে প্রত্যক্ষ করতে হবে কিভাবে হাজার হাজার মানুষ একসাথে ছুটে যাচ্ছে খাবারের লাইনের দিকে। বলা যেতে পারে, ওই আবাসে থাকা ২০,০০০ মানুষ একসাথেই ছুটতে থাকে। দৃশ্যটি আরও করুণভাবে আপনার চোখে ধরা দেবে যখন আপনি …
আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা তাহেরা। দুই বছর আগে তার স্বামী সালামের সাথে তার বিয়ে হয়। গতবছর তিনি প্রথমবারের মত অন্তঃসত্ত্বা হোন, কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে সেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার আগেই মারা যায়।
তাহেরা এবং সালামের সাথে আরও এসেছেন তাদের পরিবারের বেশ কিছু সদস্য। তাহেরার মা, সালামের ভাই এবং স্ত্রী ও চার সন্তান। এদের সকলকে পথ দেখিয়ে নিয়ে এসেছেন তাদের গ্রামের এক পরিচিত ব্যক্তি, নাম রহমত। মিয়ানমারের বাসিন্দা হলেও রহমত গত আট বছর ধরে কক্সবাজারের একটি নিবন্ধিত ক্যাম্পে বাস করছেন।
তাহেরাদের জন্য এ যাত্রা ছিল অত্যন্ত দীর্ঘ, কঠিন এবং ভয়াবহ রকমের বিপদসংকুল।
“বউটার ভালোর জন্য নিজের পক্ষে যা সম্ভব সবই চেষ্টা করেছি। কি যে …