বাংলাদেশে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আছে আইনি নীতিমালা। আমাদের সচেতনতাই হতে পারে এই সামাজিক ব্যাধির প্রতিকার।
যৌন হয়রানি কী বা কোন আচরণগুলো যৌন হয়রানির অন্তর্গত তা নিয়ে অনেকেরই স্পষ্ট কোন ধারণা নেই। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকের রয়েছে সমান অধিকার। আমাদের সমাজে আজও বিরাজ করছে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য। বাংলাদেশে নারীর প্রতি বৈষম্য এবং হয়রানি প্রতিরোধে গৃহীতঁ হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের লক্ষ্যে ১৪ মে ২০০৯, হাইকোর্ট এক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। সেই অনুযায়ী নিচে উল্লেখিত আচরণসমূহ যৌন হয়রানি বলে গণ্য হবে:
১- যে কোনো অবাঞ্ছিত শারীরিক স্পর্শ বা এ ধরনের প্রচেষ্টা
২- প্রাতিষ্ঠানিক এবং পেশাগত ক্ষমতা ব্যবহার করে কারও সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা
৩- যৌন হয়রানি ও নিপীড়নমূলক উক্তি/মন্তব্য
৪- যৌন সুযোগ লাভের জন্য অবৈধ আবেদন /দাবি
৫- পর্ণগ্রাফি দেখানো
৬- যৌন আবেদনমূলক মন্তব্য/ অঙ্গভঙ্গি
৭- অশালীন ভঙ্গি, যৌন নির্যাতনমূলক ভাষা বা মন্তব্যের মাধ্যমে উত্যক্ত করা, কাউকে অনুসরণ করা বা পেছন পেছন যাওয়া, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করে ঠাট্টা বা উপহাস করা
৮- চিঠি, টেলিফোন, মোবাইল ফোন, এসএমএস, ছবি, নোটিশ, কার্টুন, বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল, নোটিশ বোর্ড, অফিস, ফ্যাক্টরি, শ্রেণিকক্ষ, বাথরুমের দেয়ালে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ অপমানজনক কোনো কিছু লেখা
৯- ব্ল্যাকমেইল অথবা চরিত্র হননের উদ্দেশ্যে যেকোনো ধরনের স্থির বা চলমান চিত্র ধারণ করা
১০- যৌন নিপীড়ন বা হয়রানির কারণে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক, প্রাতিষ্ঠানিক এবং শিক্ষাগত কার্যক্রমের অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা
১১- প্রেম নিবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হয়ে হুমকি দেওয়া বা চাপ প্রয়োগ করা
১২- ভয় দেখিয়ে বা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে যৌন সম্পর্ক স্থাপন বা স্থাপনের চেষ্টা করা
মনে রাখবেন, আপনার নীরবতা হতে পারে অন্যায়কারীর জন্য উস্কানি। অন্যায় দেখেও নীরব থাকলে আমরাও সমান অপরাধী। নারীর প্রতি হয়রানির বিরুদ্ধে হোক প্রতিবাদ।