‘রিয়েল লাইফ হিরো’ স্বীকৃতি পেলেন ব্র্যাককর্মী

August 20, 2020

রোহিঙ্গা শিবিরের জন্য সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণের দায়িত্ব নিয়ে তিনি কক্সবাজারে যান। সেখানে কাজ করতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন সহিংসতার শিকার এবং সব হারিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আমাদের দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারীদের জন্য নিরাপদ স্থান থাকা কতোটা জরুরি।

মানবিক কাজে অনুপ্রেরণা জোগাতে জাতিসংঘ প্রতিবছর ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। গত ১৯শে আগস্ট বিশ্ব মানবতা দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ এই স্বীকৃতি ঘোষণা করে। ব্র্যাকের প্রকৌশলী রিজভী হাসান এ বছর জাতিসংঘের ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ স্বীকৃতি পেয়েছেন। অভিনন্দন রিজভী হাসান!

এ বছর কয়েকজন বাংলাদেশি এই অনন্য স্বীকৃতি লাভ করেন। ‘রিয়েল লাইফ হিরো’-র স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর হাসান সৈকত, অনুবাদক সিফাত নুর, মিডওয়াইফ তানিয়া আক্তার ও আঁখি। বাস্তব জীবনের মহানায়কদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন!

মানবিকতার নায়ক রিজভী হাসান ঢাকায় থাকেন। স্থাপত্যবিদ্যায় লেখাপড়া শেষ করে বর্তমানে চাকরি করছেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকে। রোহিঙ্গা শিবিরের জন্য সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণের দায়িত্ব নিয়ে তিনি কক্সবাজারে যান। সেখানে কাজ করতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন সহিংসতার শিকার এবং সব হারিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আমাদের দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারীদের জন্য নিরাপদ স্থান থাকা কতোটা জরুরি।

এই বিষয়টি প্রভাব ফেলে তাঁর সাইক্লোন সেন্টারের নকশা পরিকল্পনায়। বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা এদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য স্বল্প খরচে আবাসনের ব্যবস্থা করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি তার পাশাপাশি লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতায় আক্রান্ত নারী ও কিশোরীদের সেবা প্রদানের জন্য স্বল্প খরচে নিরাপদ স্থান গড়ে তোলার কাজ শুরু করলেন। বর্তমানে তাঁর নকশাকৃত এসব সাইক্লোন সেন্টারে রোহিঙ্গা শিবিরের নারীদের কাউন্সেলিংসহ নানা দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ব্যতিক্রমী এসব স্থাপনার মাধ্যমে বহু নারীকে নিরাপদে সেবা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে ব্র্যাক ও ইউনিসেফ।

রিজভী হাসান বলেন, ‘আমি সবসময়ই প্রান্তিক মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে চাই। এ কারণে প্রতিটি কাজই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।’

করোনা মহামারিকালে তানভীর হাসান সৈকত ক্যাম্পাসে থেকেই বন্ধু ও শুভাকাক্সক্ষীদের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নিয়ে মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। করোনা মহামারিতে প্রান্তিক মানুষদের সহায়তার পাশাপাশি বন্যাকবলিত মানুষদের সহায়তা করার জন্যও তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

২০১৭ সালের শুরু থেকেই তানিয়া রোহিঙ্গা মায়েদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন৷ নিজের কাজের মাধ্যমে মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে ভূমিকা রাখছেন।

জাতিসংঘের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সিফাত নুর ২০২০ সালের মার্চে ট্রান্সলেটর উইদাউট বর্ডারস নামে একটি সংস্থায় কাজ শুরুর পর এক লাখ ১৫ হাজারের বেশি শব্দ বাংলায় অনুবাদ করেছেন। এসব অনুবাদের মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের কাছে জীবন রক্ষাকারী তথ্য পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন।

এককালে শিশুশ্রমে নিয়োজিত আঁখি একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে দর্জি কাজের প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন ব্যাবসা পরিচালনা করছেন। করোনা মহামারিকালে মাস্ক-সংকট দেখা দিলে তিনি মাস্ক তৈরি করে আশপাশের দরিদ্র মানুষদের কাছে কম দামে বিক্রি শুরু করেন।

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments